Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
লক্ষ্মীছড়িতে জাতীয় স্যানিটেশন মাস ও বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস-২০২২ পালিত
বিস্তারিত

‘হাতের পরিচ্ছন্নতায় এসো সবে এক হই’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় পালিত হয়েছে জাতীয় স্যানিটেশন মাস-অক্টোবর ও বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস-২০২২। লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা প্রশাসন ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আয়োজনে ৩১ অক্টোবর সোমবার সকাল ১০ টায় র‌্যালি ও আলোচনা সভার মাধ্যমে দিবসটি পালন করা হয়। সকালে উপজেলা ভবন প্রাঙ্গণ থেকে একটি র‌্যালি বের হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুণ:রায় উপজেলা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে এসে শেষ হয়। পরে উপজেলা কমিউনিটি সেন্টারে র‌্যালি পরবর্তি এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।


আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাবুল চৌধুরী। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইশতিয়াক ইমন আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। শুভচ্ছা বক্তব্য রাখেন, উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কর্মকর্তা মো: ইব্রাহীম খলিল। বক্তব্য রাখেন, মেডিকেল অফিসার ডা. সাইদুল ইসলাম সোহেল, উপজেলা শিক্ষা অফিসার শুভাশীষ বড়ুয়া প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারি, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক, রাজনীতবিদসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকবৃন্দ।


জাতীয় স্যানিটেশন মাস-অক্টোবর ও বিশ্ব হাতধোয়া দিবস-২০২২ যথাযথভাবে উদযাপন এবং স্যানিটেশন বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিসহ ল²ীছড়ি উপজেলাকে শতভাগ ও উন্নত স্যানিটেশনের আওতায় আনয়ন কার্যক্রম গতিশীল করণের লক্ষ্যে নিয়মিত বার্ষিক কর্মসূচি হিসেবে এ র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।

.

উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল কর্মকর্তা মো: ইব্রাহীম খলিল বলেন, হাত ধোয়া দিবসের কথা শুনে অনেকেই হয়তো হেসে ওঠেন। ‘হাত ধোয়ারও দিবস আছে নাকি?’ প্রশ্নটার মাঝে কৌতূহল বা বিস্ময় যত না ছিল, তার চেয়ে বেশি ছিল বিদ্রূপ। অথচ হাত ধোয়া খুবই প্রয়োজনীয়। আমাদের একটি হাতের মাঝে যে পরিমাণ জীবাণু থাকে, তা সারিবদ্ধভাবে রাখলে পুরো এশিয়া মহাদেশের সমান আয়তন হবে! এর বেশিরভাগই ক্ষতিকারক নয়, তাই বাঁচোয়া। তাই সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও প্রতিবছর ১৫ অক্টোবর বিশ্বব্যাপী “গ্লোবাল হ্যান্ড ওয়াশিং ডে” পালন করা হয়। বিশ্বব্যাপী সবাইকে হাত ধোয়ার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা ও হাত ধোয়ায় উদ্বুদ্ধ করাই এই দিবসটি পালনের লক্ষ্য। খাবার শুরুতে যেমন হাতধোয়া দরকার, তেমনি খাবার বানাতে বা পরিবেশন করতেও যেকোন এন্টিসেপটিক ব্যবহার করে সুন্দর ভাবে হাত ধোয়া জরুরী। অনেকেই এ ব্যাপারটা জানলেও বাস্তবে অনুসরণ করেন কম। আবার কেউ কেউ হয়তো এব্যাপারে একেবারেই উদাসীন।


হাত ধোয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত আমরা যেসব ভুল করি সেসব তুলে ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইদুল ইসলাম সোহেল বলেন, অনেক সময় এক হাতে সাবান নিয়ে হালকা করে ১০-২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে ফেনা না তুলেই কচলিয়ে নিই। হাতের দুদিক এবং আঙুলের ফাঁকগুলো ঠিকমতো পরিষ্কার করি না। নখের নিচে বা কিনারা পরিষ্কার করি না এবং বুড়ো আঙুলের গোড়ার দিক মাজিনা। খাবার তৈরী, পরিবেশন ও খাওয়ার আগে হাত না ধোয়া এসব আমাদের স্বাভাবিক ভুল। একবার ব্যবহার করা পানিতে পুনরায় হাত ধোয়া কিংবা বাটিতে পানি নিয়ে সেই পানিতে একাধিক জন হাতধোয়া, একই তোয়ালেতে সবার হাত মোছা, হাত মোছার তোয়ালে মাঝে মাঝে পরিষ্কার না করা, হাতধোয়ার সময় আমরা সাধারণত এসব ভুল করে থাকি। সুস্বাস্থ্যের জন্য আমাদের অবশ্যই নিয়মিত সঠিকভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।


সভাপতির বক্তব্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: ইশতিয়াক ইমনে বলেন, হাত ধোয়ার মাধ্যমে রোগবালাই থেকে বেঁচে থাকতে হলে অবশ্যই খাবার শুরুতে ভালভাবে হাত ধুতে হবে। খাবার শেষে হাত ধুয়ে পরিষ্কার কাপড়ে বা তোয়ালেতে মুছতে হবে। খাবার প্রস্তুতকারীদেরও ভালভাবে হাত ধূয়ে নিতে হবে। কারণ, তাদের তৈরী করা খাবারই মানুষ খেয়ে থাকে। বাথরুম ব্যবহারের পর ভালভাবে হাতধোয়া, ডাক্তার, নার্স ও অন্যান্য মেডিক্যাল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের হাত ধোয়ার ব্যাপারে আরো সতর্কতা জরুরী। কারণ তাদের কারণে রোগীদের শরীরে রোগছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে অনেক বেশী। রোগীদেখার পরে প্রত্যেক চিকিৎসককে হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে, হাসপাতালে এমন কি প্রাইভেট চেম্বারেও। বিশেষ করে একজন রোগী পরীক্ষা করে দেখে দ্বিতীয় রোগী দেখার আগে হাতধোয়ার অভ্যাস করতে হবে। এছাড়া শিশুদের ডায়াপার বদলানোর পরে, বাইরের কাজ বা খেলাধুলার পরে, পোষা প্রাণীর সঙ্গে খেলার পরে ও হাঁচি-কাশিতে নাক ঝাড়ার পরেও হাত ধোয়া জরুরী। এছাড়া সঠিকভাবে হ্যান্ড ওয়াশিং এর জন্য আঙুলের নখ ছোট রাখা, কৃত্রিম নখ ব্যবহার না করা।


প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাবুল চৌধুরী বলেন, রোগজীবাণুর সংক্রমণ ছড়ানো থেকে নিজেকে এবং অন্যকে বাঁচাতে হ্যান্ড 

ওয়াশিং জরুরী একটি কাজ। নিজে এটি নিয়মিত অভ্যাস করুন এবং অন্যদেরও উব্ধুদ্ধ করুন। যেহেতু সুস্থ থাকার জন্য মৌলিক উপাদান হিসেবে হাত ধোয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ, তাই হাত ধোয়া বিষয়ক সচেতনতাকে কেবল একটি দিবসের সাথে সংযুক্ত না করে সারাবছরই এর প্রচারণা থাকা দরকার। তিনি উপস্থিত মিডিয়া কর্মিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, পরিস্থিতির উত্তোরনে সহায়তা দিতে গনমাধ্যমের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অভিভাবক ও শিক্ষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, বাড়িতে ও স্কুলে শিশুদের মাঝে এ সংক্রান্ত সাধারণ জ্ঞান দান করা বিশেষ করে শিক্ষকদের সচেষ্ট ভূমিকা এক্ষেত্রে খুবই জরুরী। কারণ শিশুরাই অপরিচ্ছন্ন জনিত রোগে ভোগে বেশি, যদিও বড়দের বেলায়ও তা প্রযোজ্য।


উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইদুল ইসলাম সোহেল সবশেষে কিভাবে সঠিক ভাবে হাত ধুতে হয় এবং হাত ধোয়ার সময় কোন কোন বিষয়গুলোর দিকে খেয়াল রাখতে হয় সকলের সামনে তা দেখিয়ে দেন।


উল্লেখ্য দক্ষিণ এশিয়ায় স্যানিটেশন ব্যবস্থায় বাংলাদেশই এগিয়ে। বাংলাদেশের শতকরা ৯৯ ভাগ মানুষ স্যানিটেশন ব্যবস্থার আওতায় । আর বাকি মাত্র ১ ভাগ মানুষ যাদের বাড়িতে টয়লেট ব্যবহারের সুযোগ নেই, তারাই খোলা স্থানে মলত্যাগ করেন। একটা জাতি কতটা উন্নত কতটা সভ্য তা স্যানিটেশন ব্যবস্থার মাধ্যমেই উপলব্ধি করা যায়। সরকারি জরিপ অনুযায়ী ২০০৩ সালে খোলা স্থানে মলত্যাগের হার ছিল ৪২ শতাংশ। এখন তা কমে মাত্র ১ শতাংশে নেমে এসেছে। যা কিনা দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন। একমাত্র শ্রীলঙ্কা এক্ষেত্রে বাংলাদেশের মতো ভালো অবস্থানে রয়েছে।


- Paharer Alo

স্থানীয় ওয়েব পোর্টালে প্রকাশিত খবর

ডাউনলোড
প্রকাশের তারিখ
31/10/2022
আর্কাইভ তারিখ
31/10/2023